তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম :
বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করতে আগামী ২১ মার্চ চট্টগ্রামে প্রধান মন্ত্রী’র জনসভা করার ঘোষনা আসে কেন্দ্র থেকে। এদিন তিনি চট্টগ্রামে জনসভায় ভাষণ দেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও বিএনএস ঈসা খাঁতে ডকইয়ার্ডের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিন থেকে মাঠ পছন্দের জন্য ব্যস্ত সময় কাটান চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এক সময়ের ঐতিয্যবাহী লালদিঘীর মাঠ দখলের কারনে ছোট হয়ে গেছে। সেখানে কোন জনসভা করতে গেলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে। বর্তমানে জনসভা করার মতো এর বিকল্প মাঠ রয়েছে রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠ। অন্যদিকে বিকল্প হিসেবে নগরীর চকবাজার প্যারেড মাঠে জনসভা আয়োজনের চিন্তা করছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। কিন্তু সেখানে জামায়াত-শিবির প্রভাবিত ও অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকায় জনসভা আয়োজনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ‘এসএসএফ’ এর সিগন্যাল না মেলায় সেখানেও হচ্ছেনা জনসভার আয়োজন। সর্বশেষ পলোগ্রাউন্ড মাঠকে বেঁচে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। সেই মোতাবেক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা আয়োজনের কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের নেতাদের।
এ বিষয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য আদর্শ মাঠ ছিল পলোগ্রাউন্ড মাঠ। কিন্তু সেখানে বানিজ্য মেলার কারণে জনসভার আয়োজন করা সম্ভব হবে না। তাছাড়া বিকল্প হিসেবে প্যারেড মাঠ (চট্টগ্রাম কলেজ মাঠ) উপযুক্ত ছিল। কিন্তু এই মাঠে জনসভা আয়োজনের ব্যাপারে এসএসএফের সম্মতি না থাকায় সেখানেও হবে না।
চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, দেশের বিভাগীয় শহর সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনার পর এবার চট্টগ্রামে জনসভা করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকার প্রধান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেন্যু ঠিক করার বিষয়ে চট্টগ্রামের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১০ মার্চ বর্ধিত সভায় ভেন্যু নির্ধারন হবে বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মুফিজুর রহমান বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম তাকে জানিয়েছেন, পলোগ্রাউন্ড ময়দানে সমাবেশ করা যায় কিনা দেখার জন্য। কিন্তু বর্তমানে সেখানে বাণিজ্য মেলা চলছে। ১০ মার্চ বর্ধিত সভায় ভেন্যু নির্ধারন হবে।
কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন দক্ষিণ জেলার নেতাদের এ নেতাদের বলেন প্রধান মন্ত্রীর সমাবেশ হবে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়ায়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে ওই সমাবেশ হবে। কিন্তু যৌথভাবে মহনগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সনসভা করার কথা ছিল। হঠাৎ ভেন্যু ও মহানগর,উত্তরের নাম বাদ পড়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে আজ ১০ মার্চ বর্ধিত সভায় নগরীর মুসলিম হলে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রধান মন্ত্রী’র জনসভার ভেন্যু পটিয়ায় ঘোষনা করলে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এর প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন, আউটার স্টেডিয়াম অথবা এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রধান মন্ত্রী’র জনসভা করতে হবে। হলের কয়েকজনকে বলতে শোনা গেলো নগরীতে প্রধান মন্ত্রী’র সমাবেশ করতে হবে। পরে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মহানগর ও উত্তর জেলায় পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী’র জনসভা আয়োজনের উদ্যেগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
এসময় মঞ্চে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হোসেন চৌধুরী নওফেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, মহানগরের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, অর্থ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঠিক হয়নি প্রধান মন্ত্রী’র জনসভার ভেন্যু।
উল্লেখ্যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জনসভা করেছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।